মমস কেয়ার সেন্টার এর এক আন্টির গল্প

আজ আমার মমস কেয়ার সেন্টার এর এক আন্টির গল্প শোনাবো আপনাদের। আমার এখানে আন্টি আসছে ২বছর ৩ মাস.আন্টির একটা সুন্দর সংসার ছিল.একমাত্র ছেলে নেদারল্যান্ড থাকে। আংকেল মারা যাওযার পর আন্টি একা হয়ে গেলো। কার কাছে থাকবে। কাজের মেয়ের উপর ভরসা পাচ্ছেনা কারণ দুজনই মেয়ে। কিছু হলে আন্টিকে কে হসপিটালে নিয়ে যাবে। আন্টির একমাত্র ছেলে আন্টির ননদের বাড়ি রেখে নেদারল্যান্ড চলে যায়। আন্টিকে নেদারল্যান্ড নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। তিন বছর চেষ্টার পর সব চেষ্টা বিফলে যায় কারণ ইউরোপ কান্ট্রি তে ৫০ বছরের উপরে পারমানেন্ট ভিসা দেয়না। আন্টির ছেলে মামলা পর্যন্ত করেছে। যেদিন কোর্ট থেকে জানানো হলো আন্টিকে নিতে পারবেনা সেদিন আন্টির ছেলে এবং ছেলের বৌ এর কান্না শুনে আন্টি ওদের বুজালো। আন্টির ছেলের বৌ চাকরি ছেড়ে দিয়েছিল আন্টি নেদারল্যান্ড গেলে আন্টি বাসায় একা কিভাবে থাকবে আন্টিকে সময় দেওয়ার জন্য।এরকম ছেলের বৌ আছে। সত্যি আছে. এখানে বলে রাখি আন্টিকে কিন্তু তার ছেলে অনেকবার বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলো এবং বিভিন্ন দেশ ঘুরিয়েছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে একটা ফোন আপনি কি সুলতানা আপা। আপা আপনার সময় হবে কিছু কথা বলবো। আপা আমি নেদারল্যান্ড থেকে বলছি আমার মায়ের একমাত্র ছেলে আমি আমার বাবা নেই। মাকে এখানে আনার জন্য সব রকম চেষ্টা করলাম কিন্তু পারিনি। আপা আমি আজ তিন রাত ঘুমাতে পারিনা মাকে আমি কোথায় রাখবো আমার বন্ধুদের সাথে আলাপ করলাম। এক বন্ধু বললো নতুন একটা সেন্টার আছে.মমস কেয়ার সেন্টার। আমার কাছে ঠিকানা নাই মোবাইল নম্বর নেই। ওয়েবসাইট খুজলাম পেলামনা তখন অবশ্য ওয়েবসাইট হয়নি। প্রবীন হিতৈষী তে ফোন করে আপনার নম্বর পেলাম।আপনার ঠিকানা বলেন। তার পরদিন তার চাচাতো বোন মামাতো ভাই ভাবি চলে আসলো দেখার জন্য। তাদের এক দেখায় পছন্দ হয়ে গেলো।আন্টির ছেলে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে চলে আসলো। আমি বলেছিলাম আন্টিকে বলছেন এখানে রাখবেন। কারণ অনেক মা আছেন বৃদ্ধাশ্রম নাম শুনলেই ভয় পায়। আপনার এটা তো রাজকীয় সেন্টার। আপা এত সুন্দর এটাকে আপনি বৃদ্ধাশ্রম বলবেননা। আমি শুনে হাসলাম। সেই থেকে আন্টি আমার কাছে। এবার মা ছেলের কিছু বাস্তব গল্প শুনাই। আন্টির খুব শখ গল্পের বই পড়ার,আন্টির ছেলে অনলাইনে বইয়ের অর্ডার দেয় এরপর আন্টি গল্পের বই পরে পুরো গল্পের ঘটনা ছেলেকে শুনায় , শুনলে মনে হবে মা ছেলেকে ঘুম পড়ানোর গল্প শুনাচ্ছে। মা ছেলের এই অটুট বন্ধন থাকুক প্রতিটা ঘরে। ভালো থাকুন সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

01718-586119